Top Newsমদ্যপ অবস্থায় রাতভর তাণ্ডব, প্রতিবাদ করায় খুন যুবক

মদ্যপ অবস্থায় রাতভর তাণ্ডব, প্রতিবাদ করায় খুন যুবক

SBN: মদ খেয়ে তাণ্ডবের প্রতিবাদ করায় খুন যুবক। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে জয়নগরের বকুলতলা থানার বেলিয়াচণ্ডী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। মৃতের নাম সায়েম খান (৩০)। ঘটনার পর অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারির দাবি ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশকে ঘিরে চলে বিক্ষোভ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিত্যদিন মদ খেয়ে বেপাড়ার ছেলেরা পাড়ায় এসে গন্ডগোল করছিল। বাড়ির দরজায় দরজায় ধাক্কাধাক্কি, লাথি মারা কিছুই বাদ ছিল না। অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এই তাণ্ডবের প্রতিবাদ করেছিলেন পাড়ার জনাকয়েক যুবক। তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে একপ্রস্থ ঝামেলা, বোমাবাজিও হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তখনকার মতো বিষয়টি মিটিয়ে দিলেও সোমবার সকালে এলাকার একটি চায়ের দোকানে চা খেতে আসেন প্রতিবাদীদের কয়েকজন। অভিযোগ, সেখানে ফের তাঁদের উপর লাঠি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে চড়াও হয় বেপাড়ার দুষ্কৃতীরা। বেশ কয়েকটি বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করে। নির্বিচারে মারধর করা হয় মহিলাদেরও। মারধরে গুরুতর জখম হন ইউসুফ খান, সুফিয়া খান, সায়েম খান-সহ পাঁচজন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহতদের প্রথমে নিমপীঠ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কজনক হওয়ায় সেখান থেকে সায়েম খান (৩০)-কে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সোমবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর মৃতদেহ নিয়ে স্থানীয়রা এলাকায় পৌঁছে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে বকুলতলা-জামতলা রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী এসে দেহ তুলতে গেলে পুলিশকে ঘিরেও চলে বিক্ষোভ। ধিক্কার জানান স্থানীয়রা। পরে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দা হামিদা বিবি বলেন, “গত কয়েকদিন ধরেই মদ খেয়ে অন্য পাড়ার ছেলেরা এসে আমাদের পাড়ায় গালিগালাজ করছিল। তারই প্রতিবাদ করেছিল কয়েকজন যুবক। ওরা পুলিশের সামনেই খুনের হুমকি দিয়েছিল। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখলে এই খুন আটকানো যেত।” নিহতের ভাই সেলিম খান বলেন, “সকালেই ৫০-৬০ জন এসে আক্রমণ করেছিল। ওরা পুলিশের সামনে রবিবার হুমকি দিচ্ছিল। তখন আমাদের তরফ থেকে বকুলতলা থানায় দুটি অভিযোগ করা হয়। সোমবার সকালে নতুন করে তারা এসে গন্ডগোল সৃষ্টি করে এবং চায়ের দোকানের বাইরে এনে দাদাকে খুন করে।” ঘটনায় কুতুবউদ্দিন মোল্লা, মোক্তার গাজি, আখতার গাজি, সালার গাজি ও শাহাবুদ্দিন গাজি-সহ একাধিক অভিযুক্ত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধেও। শুধু তাই নয়, ওই এলাকার এক তৃণমূলের বুথ সভাপতিও এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খুনের ঘটনায় কারা কারা যুক্ত, তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। পুরনো কোনও শত্রুতা, না নেহাতই মদ খাওয়াকে কেন্দ্র করে গন্ডগোল, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।