স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত বৃদ্ধ দম্পতি মোহনলাল হাজরা (৭০) ও স্ত্রী লক্ষ্মীরানি হাজরা (৬২)। কোনওরকমের দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন মোহনলাল। প্রায় বছর কুড়ি আগে ৮ বছরের একমাত্র ছেলের জলে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় তাঁদের জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। পুত্রশোকে বেশ খানিকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিলেন স্ত্রী লক্ষ্মীরানি হাজরা। 
চোখের সামনেই স্ত্রী এবং পুত্রের এই পরিণতিতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বৃদ্ধ মোহনলাল গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকায় বেশ খানিকটা নির্জনে টালির বাড়িতেই তাঁদের বসবাস ছিল। এমন অবস্থায় গতকাল বৃদ্ধ ওই দম্পতিকে সবজির তরকারি দিতে গিয়েছিলেন প্রতিবেশী জা গীতরানি হাজরা। আর তখনই বাড়ির দালানে ওই বৃদ্ধর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখে তিনি আঁতকে ওঠেন। চিৎকারে ছুটে আছেন আশেপাশে এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে বাড়ির দরজা ভেঙে শোয়ার ঘরের বিছানার উপর থেকে স্ত্রীর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। 
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মানসিক অবসাদে ভেঙে পড়ে ওই বৃদ্ধ স্বামী স্ত্রীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে নিজে গলায় দড়ি নিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। মৃতের ভাইপো সুব্রত হাজরা বলেন, “মা প্রায় প্রতিদিন বাড়িতে রান্না করা সবজির তরকারি দিয়ে আসতেন জেঠু-জেঠিমাকে। এদিন দুপুরেও মা তরকারির বাটি হাতে গিয়েছিলেন জেঠুদের বাড়িতে। আর তখনই অনেক ডাকাডাকি করলে সাড়া মিলছিল না। এরপর সকলে এসে বাড়ির বাইরের দরজার চাবি ভেঙে ঢুকে দেখেন এই পরিস্থিতি। 
স্থানীয় বাসুলিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।” মহিষাদল থানার ওসি নাড়গোপাল বিশ্বাস বলেন, “এক বৃদ্ধ তাঁর নিজের স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি। ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
