Top Newsখড়গপুরে ডিআরএম বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা

খড়গপুরে ডিআরএম বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা

খড়গপুর: তৃণমূলের সমর্থনে বস্তি বাঁচাও সংগ্ৰাম কমিটির ডাকে ডিআরএম বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আরপিএফের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তিতে উত্তেজনা তৈরি হয়। অভিযোগ উঠেছে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে আরপিএফ লাঠিচার্জ করেছে। তাতে এক তৃণমূল নেত্রী সহ এক যুব নেতা ও একজন কাউন্সিলর চোট পেয়েছেন। যদিও রেল কর্তৃপক্ষের দাবি কোনও লাঠিচার্জ করা হয় নি। তবে ধ্বস্তাধ্বস্তিতে বুকে চোট পেয়ে এখন খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন যুব নেতা অসিত পাল। বুধবার সকাল থেকে রেলশহর খড়গপুরের সাউথ সাইড এলাকায় রেলের খড়গপুর ডিভিশনের ডিআরএমের বাসভবন ঘেরাও শুরু হয়। যদিও বাসভবনের রাস্তায়  দুই প্রান্তে ব্যারিকেড করে দেওয়ায় তাঁর বাসভবনের ধারেকাছে কেউ ঘেঁষতে পারেন নি। বিশাল আরপিএফ বাহিনী মোতায়েন করা ছিল। তবে ডিআরএমের বাসভবনের পূর্ব প্রান্তে একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের দিকে সকাল ১০টা নাগাদ ডিআরএমের বাসভবন থেকে একটি গাড়ি বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনা তৈরি হয়। গাড়িতে চেপে ডিআরএম চুপিসার বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন এই অভিযোগ তুলে গাড়িটি আটকানোর চেষ্টা করেন তৃণমূল নেতৃত্ব ও বস্তি বাঁচাও সংগ্ৰাম কমিটির লোকজন। গাড়ির সামনে বসে পড়েন তৃণমূল নেত্রী হেমা চৌবে, অসিত পাল প্রমুখ। তখন আরপিএফ গাড়িটি যাওয়ার রাস্তা খালি করার চেষ্টা করে। তখনই ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়। সেই ধ্বস্তাধ্বস্তিতে বাম হাতে চোট পেয়েছেন হেমা চৌবে। বুকে চোট পান যুব নেতা অসিত পাল ও পায়ে চোট পান পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বস্তি বাঁচাও সংগ্ৰাম কমিটির অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক রোহন দাস। যদিও শেষ পর্যন্ত গাড়িটি আটকানো যায় নি। তবে এই ঘটনার পর গোটা এলাকা উত্তাল হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে খড়গপুর টাউন থানার আইসি রাজীব পালের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে দুপুরে ঘেরাও কর্মসূচি শেষ করা হয়। ঘোষণা করা হয় বৃহস্পতিবার বিকালে আরপিএফের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি মিছিল করা হবে। তবে এইদিনের ঘেরাও অবস্থানে পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ থেকে শুরু করে রেল ওয়ার্ডের চারজন তৃণমূল কাউন্সিলরকে দেখা পাওয়া যায় নি। এইদিন ডিআরএম কে আর চৌধুরীর অপসারণের দাবিতে ও রেল এলাকায় রেল কর্তৃপক্ষের বস্তি উচ্ছেদ কর্মসূচির নামে স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি হয়েছে। এই ব্যাপারে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী সরাসরি অভিযোগ তুলে বললেন ” ডিআরএমের প্ররোচনায় আরপিএফ লাঠিচার্জ করেছে।” পাশাপাশি রেল এলাকার চারজন দলীয় কাউন্সিলরের অনুপস্থিতি নিয়ে বললেন ” যাঁরা আসেন নি তাঁদের নিয়ে কিছু বলার নেই। কারন এই আন্দোলন শুধুমাত্র একটি ওয়ার্ডের বস্তি উচ্ছেদের প্রতিবাদে নয়। গোটা খড়গপুর শহরে রেল এই উচ্ছেদ করতে চাইছে। প্রত্যেকের নিজস্ব একটি গরজ থাকা দরকার।” অপরদিকে বস্তি বাঁচাও সংগ্ৰাম কমিটির অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক পুরসভার পূর্ত দফতরের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল চন্দন সিং বললেন ” সকলকেই খবর দেওয়া হয়েছে। তবে যেটুকু জানি দুজন খড়গপুরের বাইরে রয়েছেন। আর বাকি দুজন আসতেই পারতেন।” প্রসঙ্গত খড়গপুরে মোট আটটি রেল ওয়ার্ডের পাঁচটিতে তৃণমূলের কাউন্সিলর রয়েছেন। তারমধ্যে একমাত্র ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রোহন দাস একেবারে সামনের সারিতে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে রেলের খড়গপুর ডিভিশনের সিনিয়র ডিসিএম তথা জনসংযোগ আধিকারিক নিশান্ত কুমার বললেন ” কোনও লাঠিচার্জ আরপিএফ করে নি। শুধু গাড়িটি যাওয়ার রাস্তা করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তাতে কয়েকজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এই বাধাদানকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”