Paschim Medinipur: দিদি খুবই অসুস্থ। তাই কেন্দ্র থেকে চাল ও ডাল নিয়ে যাচ্ছিলেন। যদিও এই কাজটি অন্যায় বলেই তিনি মনে করেন। তবুও করেছেন। কাউকে কিছু না জানিয়ে চাল ও ডাল নিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়ে যাওয়ার পর এই অদ্ভুত যুক্তি দিলেন একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এক কর্মী।
ঘটনাটি ঘটেছে ডেবরা ব্লকের জলিবান্দা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের পরশুরামচক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। অভিযোগ এই কেন্দ্রের কর্মী অঞ্জনা চক্রবর্তী মঙ্গলবার কেন্দ্র থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে পাঁচ কিলো চাল ও দেড় কিলো ডাল দুটি ব্যাগে নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছিলেন। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার গ্ৰামে উত্তেজনা তৈরী হয়। ক্ষুব্ধ গ্ৰামবাসীরা ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুদের অভিভাবকরা এইদিন এই কর্মীকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান।
একটি ঘরে আটকে রাখেন। পরে ডেবরা থানার পুলিশ ও আইসিডিএস ডেবরা ব্লকের চন্দনা ভৌমিক নামে এক সুপারভাইজার ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তাঁদের হস্তক্ষেপে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী মুক্তি পান। এদিকে গ্ৰামবাসীরাও গোটা বিষয়টি নিয়ে ডেবরার বিডিও থেকে শুরু করে সিডিপিওকে লিখিত আকারে অভিযোগ জানানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। যদিও এই ব্যাপারে বারবার ফোন করা হলেও ফোন ধরেন নি আইসিডিএসের ডেবরা ব্লকের সিডিপিও।
তবে বিডিও প্রিয়ব্রত রাড়ি বললেন ” গোটা বিষয়টি সিডিপিওকে দেখার জন্য বলা হয়েছে।” জানা গিয়েছে মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্র বন্ধ করে সাইকেলে দুটি ব্যাগ নিয়ে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী অঞ্জনা চক্রবর্তী বাড়ি ফিরছিলেন। তখন রাস্তায় স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দোলই তাঁকে আটকান। ব্যাগ দুটি দেখতে চান। এই ব্যাপারে বিশ্বজিৎ দোলই বললেন ” প্রথমে একটি ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায় পাঁচ কিলো মত চাল রয়েছে। আর অপর ব্যাগটিতে খাতা পত্রের নিচে প্রায় দেড় কিলো ডাল রয়েছে। তারপর চেপে ধরতে স্বীকার করে বলেন দিদি অসুস্থ। তাই নিজের জন্য বরাদ্দ চাল ও ডাল নিয়ে যাচ্ছেন। পরে সবাইকে জানানো হয়। আর আজ আমরা সকলে তাঁর অপসারণের দাবি করে বিক্ষোভ দেখিয়েছি।”
অপরদিকে অভিযুক্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী অঞ্জনা চক্রবর্তী বললেন ” আমার দিদি খুবই অসুস্থ। তারজন্যই আমি এইটুকু নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি এটাও জানি কাজটা অন্যায় হয়েছে। কারন শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য বরাদ্দ করা এই খাবার নিয়ে যাওয়ার অধিকার নেই। তবে বাচ্চাদের যথেষ্ট পরিমাণে খাওয়ানোর পর নিয়ে যাচ্ছিলাম। এছাড়া আমাদের জন্য এখানে চাল ও ডাল বরাদ্দ করা থাকে। আমরা খাই না। সেটাই নিয়ে যাচ্ছিলাম। জানা গিয়েছে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্রত্যেক কর্মীর জন্য প্রতিদিন ৫০ গ্ৰাম চাল, ৩০ গ্ৰাম ডাল ও একটি করে ডিম বরাদ্দ করা থাকে। এদিকে জানা গিয়েছে গ্ৰামবাসীদের চাপে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী এইদিন সাড়ে তিন কিলো চাল ও এক কিলো সাড়ে সাতশো গ্ৰাম ডাল ফেরত দিয়েছেন। ঘটনার জেরে গ্ৰামের মানুষ রীতিমতো ক্ষুব্ধ।