Top NewsKGP: দু'টি ঘর প্রস্তুত! অথচ আজ পর্যন্ত হাসপাতালে চালু হল না সিটি...

KGP: দু’টি ঘর প্রস্তুত! অথচ আজ পর্যন্ত হাসপাতালে চালু হল না সিটি স্ক্যান ও ডায়ালিসিস ইউনিট

নিজস্ব সংবাদদাতা: পরিকাঠামো তৈরি। দু’টি ঘর প্রস্তুত করা হয়েছে। অথচ আজ পর্যন্ত খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে চালু হল না সিটি স্ক্যান ও ডায়ালিসিস ইউনিট। হাসপাতাল ভবনের বহির্বিভাগের কাছে দুইটি ঘর ফাঁকা পড়ে রয়েছে। আর এই পরিষেবা চালু না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। মূলত দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মাথায় চোট পাওয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই সিটি স্ক্যান ইউনিট চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আর কিডনির রোগীদের নামমাত্র খরচে চিকিৎসার জন্য ডায়ালিসিস ইউনিট চালু করার কথা ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই দু’টি ইউনিট হাসপাতালে চালু করা যায় নি। আর এই পরিস্থিতির জন্য কলকাতার একটি সংস্থাকে দায়ি করা হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে কলকাতার একটি সংস্থাকে এই দু’টি ইউনিট চালু করার জন্য বরাত
দেওয়া হয়েছে। এমনকি নির্ধারিত সময় পার হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু তারপরেও সংস্থাটি এই দুই ইউনিট চালু করতে না পারায় দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে সাধারন মানুষ-সহ রোগীদের। বিষয়টি নিয়ে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় নি বলে অভিযোগ। বিষয়টি আলোচনার স্তরে রয়েছে। যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। এই ব্যাপারে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গি বলেন, “অনেক দিন আগেই সংস্থাটির এই দু’টি ইউনিট চালু করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বারবার জানানো সত্ত্বেও এখনও সেই ইউনিট চালু করার কোনও উদ্যোগ নেয় নি। বিষয়টি ফের রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে জানাচ্ছি।” এই খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের কাছেই রয়েছে ৬ ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তার সঙ্গে রয়েছে একাধিক রাজ্য সড়ক। এইসব সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
আর দুর্ঘটনায় মাথায় চোট নিয়ে কাউকে এই হাসপাতালে আনা হলেই সিটি স্ক্যানের ব্যবস্থা না থাকায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিতে হয়। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় রোগী সহ পরিজনদের। তবে শুধু দুর্ঘটনাই নয়। অনেক সময় অন্য কারণেও সিটি স্ক্যান দরকার হয়। এক্ষেত্রেও রোগীদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিতে হয়। তবে শুধু সিটি স্ক্যান নয়। এই হাসপাতালের উপর খড়গপুর শহর ছাড়াও খড়গপুর গ্রামীণ, দাঁতন, পিংলা, সবং, কেশিয়াড়ি, ডেবরা, নারায়ণগড় ও মোহনপুর ব্লকের রোগীরা নির্ভরশীল। আর এই ব্লকগুলি থেকে বহু কিডনির রোগী এখানে ভর্তি হয়। এইসব রোগীদের ডায়ালিসিস করার জন্য হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আবার খুব জরুরী হলে বেসরকারি হাসপাতালে পাঠাতে হয়। তবে রোগী সঙ্কটজনক অবস্থায় থাকলে হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে বাইরে নিয়ে যেতে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় রোগীর পরিজনদের। খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হেমা চৌবে বলেন, “এই দু’টি ইউনিট চালু করার জন্য যে ঘর দরকার সেগুলি অনেক দিন আগে থেকেই তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। এই ব্যাপারে আমরা রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কোনও উত্তর আসে নি।” আর এরজন্য রোগীদের যে সমস্যা হচ্ছে সেটি তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “একটি ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের সঙ্গে আমাদের সংযোগ রয়েছে। যেসব রোগীদের ভর্তি করে চিকিৎসা করা হয়, দরকার হলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে তাঁদের সেখানে পাঠানো হয়। সেক্ষেত্রে বিনামূল্যে পরীক্ষা হয়ে যায়। আর যাঁদের কার্ড নেই তাঁদের খরচ করতে হয়।” আর এই সুযোগ ভর্তি থাকা রোগীরাই পেয়ে থাকেন। যারা বহির্বিভাগে বা জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য যান তাঁরা এই সুযোগ পান না। তাঁদের হয় মেদিনীপুর মেডিক্যালে যেতে হয়। নতুবা বাইরে কোনও ডায়াগনেস্টিক কেন্দ্র থেকে টাকা খরচ করে পরীক্ষা করাতে হয়।