SBN NEWS: দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে লোকসভার শেষ ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বুঝিয়ে দিলেন, তিনি কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে বিশেষ ‘গুরুত্ব’ দেন। মোদির ভাষণ চলাকালীন বিরোধী শিবির থেকে একাধিক সাংসদ টিপ্পনী কাটলেও তিনি একমাত্র অধীরের নাম করেই বারবার জবাব দিয়েছেন। অধীরের বিরুদ্ধে তৃণমূলের বরাবরের অভিযোগ, তিনি বিজেপির বড় এজেন্ট। জোট ভাঙার জন্যও তৃণমূল অধীরকেই দায়ী করেছে। এদিন মোদির মুখে অধীরের ঢালাও প্রশংসা যে তৃণমূলের অভিযোগকে আরও জোরালো করল তা বলাই বাহুল্য। সোমবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদজ্ঞাপন করতে গিয়ে জবাবি বক্তব্যে ‘অধীরের জন্য আমার দুঃখ হয়’ বলে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। মোদি বলেছেন, “অধীরজির অবস্থা দেখুন। ওঁকে দেখে আমার কষ্ট হয়। পরিবারের সেবা করতে হচ্ছে, অথচ তাঁর সে সময় সংসদে থাকার কথা ছিল।” প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। এদিন অধীরের দিকে সমবেদনার সুরে মন্তব্য করলেও আসলে তিনি বলতে চেয়েছেন, লোকসভার দলনেতা হিসাবে সংসদে হাজির থাকার কথা ছিল অধীরের। কিন্তু তিনি যে রাহুলের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় হাজির থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন, মোদি সেই ইঙ্গিতই করেছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আবার মোদির বক্তব্যের শুরুর দিকেই প্রথমে অধীর এবং প্রায় একই সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায় ‘সংখ্যালঘুদের কথা কোথায়’ বলে খোঁচা দেন। তখন গলা চড়িয়ে তাঁদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর জবাব, “অধীরবাবু দাদা, আপনাদের কাছে নারী, যুবা, গরিব, কৃষক, জেলে এরা সংখ্যালঘু নয় কি! কতদিন দেশকে টুকরো টুকরো দেখবেন।” আবার বক্তব্যর শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই চলবে বলেও জানানোর সময় অধীরের নাম করে “আপনার রাজ্যে নোটের পাহাড় দেখেছেন তো” বলেই টিপ্পনি করেছেন। এদিকে মোদির ভাষণের পরেই সাংবাদিক বৈঠক করেন অধীর। সেখানে মোদিকে পাল্টা কটাক্ষ করে অধীর বলেছেন, “দু’বার প্রধানমন্ত্রী হয়েও তিনি রাষ্ট্রনায়ক হয়ে উঠতে পারেননি। কুয়োর ব্যাঙ হিসাবে থেকে গিয়েছেন।” প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দিশাহারা, দেশের মানুষের আসল সমস্যা সমাধানের কোনও কথাই সেখানে বলা হয়নি বলে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অধীর। প্রধানমন্ত্রীর আসন জয়ের ঘোষণা নিয়েও নির্বাচনে গরমিল হতে পারে, ইভিএমের অপব্যহার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অধীর। তিনি আরও বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে তিনি কংগ্রেসকেই সব থেকে বড় শত্রু বলে মনে করছেন। কংগ্রেসই যে একমাত্র তাঁদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে, সেই ভাবনা থেকেই তিনি এদিন কংগ্রেসের দিকে মূলত আক্রমণ করেছেন।”