Top Newsসম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জের, ভাইয়ের হাঁসুয়ার কোপে প্রাণ গেল দাদার

সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জের, ভাইয়ের হাঁসুয়ার কোপে প্রাণ গেল দাদার

কান্দি: দাদা পেশায় কষাই। রোজই পশু জবাই করেন। কাটেন মাংস। ছোট ভাই পেশায় কৃষক। শস্য ফলানোই তার কাজ। নিজের ফলানো শস্য কাটার কাজে ব্যবহার করতেন হাঁসুয়া। কিন্তু সামান্য এককাঠার জমিকে কেন্দ্র করে সেই হাঁসুয়ার কোপেই যে সে তার দাদার প্রাণ কেড়ে নেবে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি কেউ। বাড়ির উঠানের মাত্র এক কাঠা জায়গার দখল সংক্রান্ত বিবাদের জেরে বাবার সামনেই দাদাকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল পেশায় কৃষক ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে। চোখের সামনে দুই সন্তানের কাজিয়ায় বড় ছেলের প্রাণ যাওয়ার ঘটনার কথা শুনে কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা অসহায় বৃদ্ধ বাবার। মা অসুস্থ থাকায় ঘটনায় সময় শয্যাশায়ী ছিলেন।
মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা থানার অন্তর্গত পাঁচথুপি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলগ্রামের এই মর্মান্তিক ঘটনায় বিস্মিত পড়শিরা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম ফরোজ খান (৩৫)। বাড়ি বেলগ্রাম গ্রামে। খুন হওয়া ফরোজ খানের স্ত্রীর অভিযোগ মতো তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত ভাই আসাই খান ও উনার স্ত্রী ফুলেজা বিবি পলাতক। তাদের খোঁজ করা হচ্ছে। মৃত ফরোজ খানের দেহ কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করে বাড়ির লোকেদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বড়ভাই ফরোজ খান ও ছোটভাই আসাই খান দুই ভাই মদ্যপ অবস্থায় জমি সংক্রান্ত পুরনো একটি বিবাদকে কেন্দ্র করে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। পরে ঝগড়া থেমেও যায়। একফালি জায়গাতেই ছোটভাইয়ের কাঁচা বাড়ি ও বড় ভাইয়ের পাকা। বাড়ির ভিতরে মাঝখানে থাকা ফাঁকা এককাঠা জায়গাতেই দু’জনের দখল করা নিয়ে বিবাদ চলছিল। বহুদিন ধরে এই বিবাদ চললেও বিষয়টিকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি খুনোখুনির দিকে গড়াবে, তা ভাবতে পারেননি পড়শিরাও।
বাবা তকিরুদ্দিন খান বলেন, “ওদিন রাত ১২ টা নাগাদ আসাই তার দাদাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর এক কোপ মারে। আমি চিৎকার করলে সকল ছুটে আসে। লোকজন দাঁড়িয়ে থাকলেও বাঁচাতে পারিনি কেউ। হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে ও পালিয়ে যায়। তবে আমি কারও সাজা চাই না। এক ছেলে খুন হয়েছে। আর এক ছেলের ফাঁসি হলে আমি কী করব! আমি সকলকে নিয়ে থাকতে চাই।” মা জোহরা বিবি আগে থেকেই বাড়িতেই শয্যাশায়ী। এই অবস্থায় ছোট ছেলের হাতে বড় ছেলের খুন হওয়ার কথা শুনে তিনি পুরোপুরি হতবাক। তবে স্বামীর খুনের বিচার চান স্ত্রী মেহেনুজা বিবি। তাঁর বক্তব্য, “আমার তিন ছেলের সামনে স্বামী খুন হয়েছেন। গ্রামবাসীরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যন। ওখান থেকে কান্দি মহকুমা হাসপাতাল রেফার করে। পথে মারা যায়।” মেহেনুজা বিবি আরও বলেন, “আমার স্বামীকে হাঁসুয়া দিয়ে খুন করেছে আমার দেওর। আমি ওর ফাঁসি চাই।”