SBN: প্রিয় বান্ধবী মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে আসছে না দেখে সন্দেহ হয়েছিল এক সহপাঠিনীর। সে বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করে জানতে পারে, ছ’দিন আগে বান্ধবী আত্মহত্যা করেছে। এবং তার বাবা থানা-পুলিশের ঝামেলায় না গিয়ে বাড়ির কাছে এক মাঠে মেয়েকে পত্রপাঠ কবর দিয়ে দিয়েছেন! ভাঙড়ের উত্তর কাশীপুর থানার চণ্ডীহাট গ্রামের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কিশোরী পারভিনা খাতুনের (১৬) এহেন পরিণতির খবর প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পুলিশ বৃহস্পতিবার কবর থেকে পারভিনার দেহ তুলে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পারভিনা কারবালা হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছিল, সিট পড়েছিল কচুয়া হাইস্কুলে। বাংলা ও ইংরেজি পরীক্ষায় বসেছিল। তৃতীয় পরীক্ষার আগে, ১৪ ফেব্রুয়ারি সে বাড়িতে ওড়নার ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয় বলে পরিবারের দাবি। পারভিনার বাবার বক্তব্য, ময়নাতদন্ত এড়াতে পুলিশকে না জানিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি লাগোয়া মাঠের এক কোণে মেয়েকে যথাবিহিত কবরস্থ করেছেন। পারভিনার সহপাঠিনী সঙ্গে সঙ্গে থানায় খবর দেয়। পুলিশ পারভিনার বাড়িতে যায়। বাবা পুরো ঘটনাটি পুলিশকে জানান। নিয়ম অনুযায়ী, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে শবদেহের ময়নাতদন্ত আবশ্যিক। বারুইপুর আদালতের অনুমতিক্রমে এ দিন সকালে কবর থেকে তুলে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পারভিনা কী কারণে আত্মহত্যা করল, এখনও স্পষ্ট নয়। পারভিনার বাবা হান্নান হাজরা বলেন, “মেয়ের সঙ্গে কারও কোনও ঝগড়া বা ঝামেলা হয়নি। দুটো পরীক্ষা দিয়েছিল। গত শুক্রবার আমি কাজে গিয়েছিলাম। ওর মা ছিল উপরের ঘরে। পরে নিচে এসে দেখে, পারভিনা ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে। কেন এমন করল, জানি না। মেয়ের শরীরে কাটাছেঁড়া চাইনি বলেই গ্রামের লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করে কবর দিয়েছিলাম।”
ডিসিপি (ভাঙড় ডিভিশন-২) শুভজ্যোতি সেনের কথায়, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে। তার আগে মৃত্যুর কারণ নিয়ে কিছু বলা ঠিক নয়।” এ দিন পারভিনার দেহ তোলার খবর চাউর হতে আশপাশের বহু মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। উত্তর কাশীপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। একজন ডাক্তার এবং এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ছাত্রীর দেহ তুলে সুরতহাল করা হয়। তার পরে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় কাঁটাপুকুর মর্গে।
আত্মঘাতী মেয়েকে লুকিয়ে কবর দিল বাবা! তারপর ?
