Top NewsDantan Crime: কিশোরকে খুন করেও লুকোতে পারলেন না অবৈধ সম্পর্ক, পুলিশের জালে...

Dantan Crime: কিশোরকে খুন করেও লুকোতে পারলেন না অবৈধ সম্পর্ক, পুলিশের জালে সৎ-মা

দাঁতনঃ সৎমা ও কাকাকে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেছিল ১৩ বছরের কিশোর ইকবাল বক্স। আর এই অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি ঠাকুমাকে বলে দেবে বলেছিল কিশোর। তারপরেই ভোররাতে বিছানা থেকে এই কিশোরের গলার নলিকাটা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। যদিও ঘটনার আড়ালের জন্য কাকা বাবজি বক্স বলেছিলেন ভাইপোর মৃত্যু হয়েছে চলন্ত সিলিং ফ্যানের ব্লেডে। যদিও এই বাবজির এই কথা কারোর কাছেই বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি। মৃতদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমে কিশোরের সৎমাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জেরায় পুলিশ আটক মহিলার বয়ানে অনেক অসঙ্গতি পায়। পরে শনিবার রাতের দিকে কাকা বাবজি বক্সকেও আটক করে। আর রবিবার দুপুরে মৃত কিশোরের মা খুশবু শেখের একটি অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই কিশোর খুনের ঘটনায় গ্ৰেপ্তার করে সৎ-মা ও কাকাকে। দাঁতন থানার পুলিশ কিশোরের মায়ের অভিযোগ পাওয়ার পর রবিবার বিকালে দুজনকে গ্ৰেপ্তার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতরা হলেন সানোয়ারা বিবি ও বাবজি বক্স। ধৃত দুজনের বাড়ি দাঁতন থানার দাঁতন দুই নম্বর ব্লকের তুরকা এলাকায়। ধৃতদের সোমবার দাঁতন এসিজেএম আদালতে হাজির করা হবে। পুলিশ মৃত ১৩ বছরের কিশোর ইকবাল বক্সের মা খুশবু শেখের অভিযোগের ভিত্তিতে ধৃত দুজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার খুন সহ চক্রান্ত ও আরও বেশ কয়েকটি ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেছেন ” সৎমা ও কাকার অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি দেখে ফেলার কারনে কিশোরকে খুন করা হয়েছে। দুজনকেই গ্ৰেপ্তার করা হয়েছে।” ধৃত মহিলা বর্তমানে মুম্বাই নিবাসী রবিউল বক্সের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। এর বাপের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর থানার কড়াই গ্ৰামে। আর মৃত কিশোর রবিউলের প্রথম পক্ষের স্ত্রী খুশবু শেখের ছেলে। মুম্বাইয়ের বাসিন্দা খুশবুর সঙ্গে রবিউলের প্রথম বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই রবিউল শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। তাঁদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। বড় ছেলে বর্তমানে মুম্বাইতে একটি গ্যারেজে কাজ করে। আর সেখানেই থাকে। একেবারে ছোটোবেলায় মুম্বাইতে একটি বহুতল ভবন থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় একমাত্র মেয়ের। রবিউল মুম্বাইতে দর্জির কাজ করেন। সেখান থেকে তুরকার বাড়িতে মাঝেমধ্যে যাতায়াত করেন। এই তিন সন্তানের জন্মের পর রবিউল দ্বিতীয় বিবাহ করেন। তিনি সানোয়ারাকে বিয়ে করেন আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগে। পরবর্তীকালে রবিউল ফের তৃতীয় বিয়ে করেন মুম্বাইতে। তাও প্রায় চার বছর হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে সেই সময় থেকেই বাবজির সঙ্গে একটি অবৈধ সম্পর্ক তৈরি হয় সানোয়ারার। বাবজি চেন্নাইতে থাকেন। সেখানে তিনি একটি হোটেলে কাজ করেন। পাঁচ ছয় মাস অন্তর বাড়িতে আসেন। তবে বৌদির সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ ও ভিডিও কলের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতেন তিনি। জানা গিয়েছে বাবজি এই মাসের ৪ তারিখ চেন্নাই থেকে ফেরেন বাড়িতে ইদ উপলক্ষে। ঘটনার আগের দিন শুক্রবার রাতে ইকবাল সৎমা ও এক খুড়তুতো ভাইয়ের সঙ্গে শুয়েছিল। তখনই রাত সাড়ে বারটা নাগাদ সৎমা ও কাকাকে সে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে। আর বলে ঠাকুমাকে বলে দেবে। তারপরেই শনিবার ভোররাতে বিছানা থেকে কিশোরের গলার নলিকাটা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মাংস কাটার ছুরি দিয়ে কিশোরের গলার নলিকাটা হয়েছে। আর কাজটি করেছে বাবজি। সৎমা প্রেমিক দেওরকে সাহায্য করেছে। এখন এলাকার সকলেই ধৃত দুজনের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।