নিজস্ব সংবাদদাতা : আশ্বাসই সার। জল সংকট অব্যাহত খড়গপুর পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকায়। পুরসভার পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল মঙ্গলবার সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। জল সরবরাহ চালু হয়ে যাবে। কিন্তু এইদিনও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয় নি। দিনভর নির্জলা রইল খড়গপুর শহরের ইন্দা থেকে খরিদা,মালঞ্চ হয়ে নিমপুরা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা। এদিনও জল পেলেন না পুরসভার ১৪টি ওয়ার্ডের কয়েক হাজার মানুষ। ফলে মানুষের ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় বোরিং নেই সেইসব এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। জলের অভাবে এইসব এলাকার গৃহস্থ বাড়িতে দৈনন্দিন কাজ থমকে গিয়েছে। এমনকি কমোটে জলের অভাবে অনেককেই মল ত্যাগ বন্ধ রাখতে হয়েছে। আর প্রাকৃতিক এই কাজ বন্ধ রাখার কারনে এখন বহু পরিবারে গ্যাস অম্বল শুরু হয়েছে। এককথায় গোটা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আর এই পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে সেই বিষয়েও কোনও সুনির্দিষ্ট বক্তব্য বা তথ্য পুরসভার পক্ষ থেকে পাওয়া যায় নি। কাউন্সিলররা তো দূরের কথা। এমনকি পুরপ্রধান পর্যন্ত কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না বুধবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার ব্যাপারে। যদিও বলা হচ্ছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য কাজ চলছে। জানা গিয়েছে ইতিমধ্যে ফেটে যাওয়া জল সরবরাহের মোটা পাইপটি মেরামত করা হয়েছে। এমনকি ঝড়িয়া পাম্পিং স্টেশনে কলকাতা থেকে ভাল্ব আনিয়ে সেটি লাগানো হয়েছে। তারপর পরীক্ষামূলকভাবে জল ছাড়ার চেষ্টা করতেই নিচে একটি পাইপে আবার ফাটল দেখা দিয়েছে। এখন এই পাইপের ফাটল মেরামতের কাজ চলছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও এই ফাটল মেরামতের পর বুধবার সকাল থেকে শহরের মানুষ জল পাবেন কিনা সেটি এখনও ধোঁয়াশায় রয়েছে। ফলে এই নিয়ে পরপর চারদিন খড়গপুর পুরসভার ১৪টি ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা জল পেলেন না। আর এই নিয়ে ক্ষোভ সাধারন মানুষের মধ্যে তো হয়েছেই। এমনকি শাসকদলের কাউন্সিলররাও নাম না প্রকাশ করার শর্তে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাসকদলের এক কাউন্সিলর তো বলেই ফেললেন ” এরকম পরিস্থিতিতে আগে কখনও শহরের মানুষকে পড়তে হয় নি। এলাকায় এখন মুখ দেখানো দায় হয়ে পড়েছে।” আর পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর বিষ্ণু বাহাদুর কামি বললেন ” আমি বুঝতে পারছি না এতদিন কেন লাগছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে। পুরসভার উচিত ছিল যেদিন মোটা পাইপ লাইনে ফাটল সেদিন থেকেই যুদ্ধকলীন তৎপরতায় কাজ শুরু করা। কারন জল হচ্ছে মানুষের কাছে সবচেয়ে জরুরি জিনিস।” আর পরিস্থিতি বুধবার স্বাভাবিক হওয়ার ব্যাপারে পুরসভার আশ্বাসবাণীতে যে আস্থা রাখতে পারছেন না সেটি কার্যত স্পষ্ট করে দিলেন পুরসভার জঞ্জাল সাফাই বিভাগের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সদস্য তথা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নমিতা চৌধুরীর স্বামী প্রাক্তন কাউন্সিলর দেবাশিস চৌধুরী। তিনি বললেন ” আমি বুধবারেও আমার ওয়ার্ডের তিনটি এলাকায় পুরসভার জলের ট্যাঙ্ক আনিয়ে রাখব।” তবে বুধবার সকাল থেকেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে ফের আশ্বাস দিলেন খড়গপুরের পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ। যদিও এই আশ্বাস বাণীর মধ্যে নিশ্চয়তার কোনও সুর পাওয়া গেল না। তিনি আবার পুরসভার জল বিভাগের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সদস্য। তিনি বললেন ” পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। আশা করছি বুধবার সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। শহরের মানুষ জল পাবেন।” এখন দেখার বুধবার সকালে সত্যিই খড়গপুর শহরের মানুষের ভাগ্যে জল জোটে কিনা।
রাজ্যWater crisis: আশ্বাসই সার! জল সংকট অব্যাহত খড়গপুর পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকায়
Water crisis: আশ্বাসই সার! জল সংকট অব্যাহত খড়গপুর পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকায়
78
